আবু সায়েম, কক্সবাজার •
কক্সবাজারে রামু থানাধীন ঈদগড়স্থ তুলাতলি এলাকার গহীন পাহাড়ে অস্ত্র তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র তৈরি ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার সাথে জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
১৩ ডিসেম্বর ( বুধবার) ভোর ৫ টা থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫ ‘র একটি দল কক্সবাজার জেলার রামু থানাধীন ঈদগড় ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডস্থ তুলাতুলি এলাকার আবু সামার ঘোনার পশ্চিম পাশে গহীন পাহাড়ে অবস্থানরত অবৈধ অস্ত্র তৈরীর সাথে জড়িত অস্ত্র ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান পরিচালনার সময় একটি অস্ত্র তৈরীর কারখানার সন্ধান পায়। র্যাবের অভিযানের বিষয়টি টের পেলে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীরা দূর্গম পাহাড়ের এদিক-ওদিক দৌড়ে পালিয়ে যেতে থাকে।
এ সময় পলায়নকালে ধাওয়া করে অবৈধ অস্ত্র তৈরী, কেনা-বেচার সাথে জড়িত চক্রের চারজনকে র্যাবের আভিযানিক দল গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। অস্ত্রের কারখানা থেকে ০২টি এলজি, ০৮টি ওয়ান শুটার গান, ১১ রাউন্ড গুলি, ১২ বোর কার্তুজ ৭টি, ফায়ারকৃত গুলির খোসা ০৪টি এবং অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জামাদি মধ্যে উল্লেখযোগ্য অস্ত্র তৈরীর জন্য ০৭টি রড, ০৪টি হাতুড়ি, অস্ত্রের ফাইল ১০টি, বাটাল ০৩টি, ড্রিল মেশিন ০১টি, প্লাস ০২টি, স্ক্রু ড্রাইবার ০৩টি স্প্রিং, বাটাল সান দেয়ার জন্য শীল, ব্যান্ড বাইশ ও বাতাশ ও আগুন দেয়ার জন্য মোটরসহ অস্ত্র তৈরীর আনুষাঙ্গিক ছোট-বড় বেশকিছু সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত অস্ত্র ব্যবসায়িরা হলো,রামুর ঈদগড় ইউনিয়নের মৃত আব্দুল জলিলের পুত্র সাহাব উদ্দিন(৪০),একই ইউনিয়ন ও উপজেলার মৃত সোলেমানের পুত্র লাল মিয়া (৫৮),রামুর ঈদগড় ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খইল্লা মিয়ার পুত্র মাঈন উদ্দিন (৪৩) এবং একই ইউনিয়ন ও উপজেলার নাজির হোসেনের পুত্র জাফর আলম (৪১)।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত অস্ত্র ব্যবসায়ীরা রামুর ঈদগড়স্থ তুলাতুলি এলাকার গহীন পাহাড়ে অবস্থান করে অস্ত্র তৈরী ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা পরিচালনাসহ ডাকাতি, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় এবং মাদক’সহ নানাবিধ অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা স্বীকার করেন । এছাড়াও দূর্গম পাহাড়ী এলাকা হওয়ার সুবাদে সেখানে গড়ে তুলে অস্ত্র তৈরীর কারখানা। গ্রেফতারকৃত অস্ত্র ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ে তাদের অন্যান্য সহযোগীদের মাধ্যমে বিভিন্ন সন্ত্রাসী চক্রের নিকট অস্ত্র সরবরাহ’সহ নিজেদের তৈরীকৃত আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা তাদের অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা করতো। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শেষে তারা পুনরায় গহীন পাহাড়ে তৈরীকৃত আস্তানায় আত্মগোপনে চলে যেত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অবগত করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবু সালাম চৌধুরী ( ল’ এন্ড মিডিয়া) বলেন,র্যাব-১৫, কক্সবাজার শুরু থেকেই নিজ দায়িত্বাধীন এলাকায় খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, জলদস্যু, ডাকাত, চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গী দমন, মাদক এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিরাজমান বিভিন্ন অপরাধ নির্মূলে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে।
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কেন্দ্রিক সহিংসতা রোধে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে র্যাব-১৫ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-